যাদু / ব্ল্যাক ম্যাজিক / বান মারার জন্য রুকইয়া:
যাদু আক্রান্ত হলে বোঝার উপায়ঃ
রুকইয়ার সাধারণ আয়াতগুলো যাদু আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর পড়লে, অথবা রুকইয়ার আয়াতের অডিও শুনলে যাদুগ্রস্তের অস্বাভাবিক অনুভূতি হয়। যেমন, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, পেট ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি। এছাড়া নিচে উল্লেখিত আয়াতগুলো পড়ে পানি খেলেও এরকম প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
এটা যাচাই করার জন্য, ভালোভাবে পাক-পবিত্র হয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ুন। এরপর দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে আপনার সমস্যা থেকে ‘পরিত্রাণের’ জন্য এবং সুস্থতার জন্য দু’আ করে ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ পড়ে রুকইয়াহ শুরু করুন। হাতের কাছে এক বোতল পানি নিয়ে বসুন। প্রথমে সিহরের রুকইয়া (রুকইয়াহ অডিও লিংকের ১১ থেকে ২০ মধ্যে যেকোনটা) শুনুন।
আপনার যদি জাদুর সমস্যা থাকে তাহলে কিছু ইফেক্ট হতে পারে। যেমন: পেটব্যাথা বা মাথাব্যথা করতে পারে। কিছু খাইয়ে যাদু করলে পেটব্যথা করবে, বমি বমি লাগতে পারে, হাত-পা-পিঠ ব্যথা করতে পারে, শরীর অবশ হয়ে আসতে পারে, প্রচণ্ড রাগ বা বিরক্ত লাগতে পারে ইত্যাদি। এরকম কিছু হলে বুঝে নিবেন সমস্যা আছে। তখন নিচের প্রেসক্রিপশন ফলো করুন।
প্রেসক্রিপশন
যাদুর প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার রুকইয়া করা হয়। তবে কমন সেলফ রুকইয়া হচ্ছে-
প্রথমে সমস্যার জন্য নিয়াত ঠিক করে নিন, ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ পড়ে শুরু করুন। এরপর একটি বোতল ভর্তি পানি নিয়ে ক. সুরা আ’রাফ ১১৭-১২২ খ. ইউনুস ৮১-৮২ গ. সুরা ত্বহা ৬৯নং আয়াত পড়ে ফুঁ দিন।আপনাদের সুবিধার্থে এই আয়াতগুলো এখানে দেয়া হল। কেউ চাইলে কুরআনুল কারীম দেখেও পড়তে পারবেন।
১.
وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ – فَوَقَعَ الْحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ – فَغُلِبُوا هُنَالِكَ وَانقَلَبُوا صَاغِرِينَ – وَأُلْقِيَ السَّحَرَةُ سَاجِدِينَ -قَالُوا آمَنَّا بِرَبِّ الْعَالَمِينَ – رَبِّ مُوسَىٰ وَهَارُونَ –
উচ্চারন শুনুন সুরা আ’রাফ ১১৭-১২২
২.
فَلَمَّا أَلْقَوْا قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئْتُم بِهِ السِّحْرُ ۖ إِنَّ اللَّهَ سَيُبْطِلُهُ ۖ إِنَّ اللَّهَ لَا يُصْلِحُ عَمَلَ الْمُفْسِدِينَ – وَيُحِقُّ اللَّهُ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُجْرِمُونَ –
উচ্চারন শুনুন ইউনুস ৮১-৮২
৩.
وَأَلْقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلْقَفْ مَا صَنَعُوا ۖ إِنَّمَا صَنَعُوا كَيْدُ سَاحِرٍ ۖ وَلَا يُفْلِحُ السَّاحِرُ حَيْثُ أَتَىٰ –
ঘ. এরপর আয়াতুল কুরসি, সুরা ফালাক্ব, সুরা নাস ৩বার পড়ে ফুঁ দিন।
– উচ্চারন শুনুন সুরা আয়াতুল কুরসি
– তিন থেকে সাতদিন, বা প্রয়োজনে আরও বেশিদিন সকাল-বিকাল এই পানি খেতে হবে এবং গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করতে হবে।
– আর মাসখানেক প্রতিদিন অন্তত দেড়-দুইঘণ্টা রুকইয়া শুনতে হবে। একঘণ্টা সাধারণ রুকইয়া (ডাউনলোড পেইজের ১১ থেকে ২৩ নং পর্যন্ত রুকইয়াহ গুলো সাধারণ রুকইয়াহ। আপনার যেটা ইচ্ছা ডাউনলোড করে শুনবেন) আর একঘণ্টা সুরা ইখলাস, ফালাক, নাসের (ডাউনলোড পেইজের ৯ নং) রুকইয়াহ। (ডাউনলোড লিংক – রুকইয়াহ অডিও )। যদি নিজে তিলাওয়াত করেন তাহলে আরও ভাল। সেক্ষেত্রে আধাঘণ্টা বা একবার রুকইয়ার সাধারণ আয়াতগুলো। আর আধাঘণ্টা সুরা ইখলাস, ফালাক, নাস বারবার পড়বেন।
– প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা এবং ঘুমের আগে আয়াতুল কুরসি ১বার, ইখলাস, ফালাক, নাস ৩বার পড়বেন সুরক্ষার জন্য। নিরাপত্তার অন্যান্য ‘মাসনুন আমল’ পাবেন এই লিংকে- মাসনুন আমল
— বরই পাতার গোসল জাদু আক্রান্তদের জন্য বেশ উপকারী। সম্ভব হলে লিংকের নিয়ম অনুযায়ী কয়েকদিন গোসল করতে পারেন।
– আর পাশাপাশি তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে নিয়মিত দোআ করবেন। দেখুন – দোয়া কবুলের বিশেষ আমল, স্থান ও সময়
.
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম সপ্তাহেই উন্নতি টের পাওয়া যায়, তবে এরপরের কয়েক সপ্তাহ একঘন্টা করে হলেও রুকইয়া শুনে যেতে হবে। সমস্যা কম-বেশি যাইহোক, রুকইয়াহ বাদ দেয়া যাবে না। তাহলে ইনশাআল্লাহ খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে যাবে। যদি দুই-তিন সপ্তাহ পরেও সমস্যা শেষ না হয়, তবে আবার অনুরূপ করতে হবে বা অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিয়ে প্রেসক্রিপশন পাল্টে নিতে হবে।
….
যাদুর কোন জিনিশ অথবা তাবিজ খুঁজে পেলে:
কি দিয়ে যাদু করেছে যদি পাওয়া যায়, অথবা সন্দেহজনক কোন তাবিজ পেলে উপরে বলা আয়াতগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিন, এরপর তাবিজ অথবা যাদুর জিনিশগুলো ডুবিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, তাহলে ইনশাআল্লাহ যাদু নষ্ট হয়ে যাবে। পরে সেগুলো পুড়িয়ে বা নষ্ট করে দিন। (জাদুর জিনিস নষ্টের বিস্তারিত নিয়ম)
যাদু, জ্বিন, বদনজর সম্পর্কিত একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে:
একসাথে একাধিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে প্রথমে বদনজরের জন্য রুকইয়া করতে হবে, এরপর জ্বিনের রুকইয়া এবং যাদুর জন্য রুকইয়া।
কার্টেসি: রুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপ